| |
               

মূল পাতা সারাদেশ রাজধানী কুরবানীর পশুর চামড়ার মূল্য পুনর্বিবেচনার আহ্বান উলামায়ে কেরামের


কুরবানীর পশুর চামড়ার মূল্য পুনর্বিবেচনার আহ্বান উলামায়ে কেরামের


রহমত নিউজ     31 May, 2025     02:01 PM    


সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারিত কুরবানির পশুর চামড়ার মূল্য ও মাদরাসা গুলোতে লবণ সরবরাহের সরকারি সিদ্ধান্তকে প্রত্যাখ্যান করে পুনর্বিবেচনার আহ্বান জানিয়েছে অর্ধশতাধিক কওমি মাদরাসার মুহতামিম এবং উলামায়ে কেরাম।

বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বাদ এশা  রাজধানীর কামরাঙ্গীচরে জামিয়া নুরিয়া ইসলামিয়ায় বিভিন্ন মাদরাসার মুহতামিম, ইমাম, খতিব ও উলামায়ে কেরামদের এক জরুরী আলোচনা সভায় এই আহ্বান জানানো হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন জামিয়া নুরিয়া ইসলামিয়ার মহাপরিচালক ও খেলাফত আন্দোলনের আমীর মাওলানা হাবিবুল্লাহ মিয়াজী।

সভাপতির বক্তব্যে তিনি বলেন, আসন্ন ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে  সরকারের বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কুরবানীর পশুর লবণযুক্ত চামড়ার দাম প্রতি বর্গফুট ৫ টাকা বাড়িয়ে শহরে ৬৫ টাকা এবং গ্রামে ৬০ টাকা নির্ধারণ করেছে। সে হিসাবে একটি চামড়ার দাম ১১৫০ থেকে ১৩৫০ টাকা পরে।অথচ ১৫-২০ বছর আগেও প্রতিটি গরুর কাঁচা চামড়া ২/৩ গুন বেশি মূল্যে বিক্রি হয়েছে। তিনি বলেন,বাংলাদেশ সহ পৃথিবীর কোথাও চামড়া জাত দ্রব্যের দাম কমেনি বরং বেড়েছে। তাহলে কুরবানীর পশুর চামড়া মূল্য কোন কারণে কমেছে  সরকারকে তা খুঁজে বের করতে হবে।  কী পরিমাণ বিদেশে রফতানি হচ্ছে।অবৈধ সিন্ডিকেট খুজে বের করে শাস্তির আওতায় আনতে হবে। কোরবানির পশুর চামড়ার মূল্য কম হওয়ায় প্রকৃত হকদার এতিম গরিবদের অধিকার খর্ব হচ্ছে। বিশেষ করে কওমী মাদরাসা গুলো অর্থনৈতিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সবচেয়ে বেশি।  

তিনি আরও বলেন, বিগত ফ্যাসিস্ট সরকার ভিনদেশীদের স্বার্থ রক্ষায় বাংলাদেশের পাট শিল্পকে ধ্বংস করার পর চামড়া শিল্পকেও ধ্বংস মুখোমুখি দাঁড় করিয়েছে। এতে বাংলাদেশ  অর্থনৈতিকভাবে  যারপর নাই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

উপস্থিত উলামায়ে কেরাম বলেন, এদেশের মুসলমানরা কোরবানির চামড়া কওমি মাদরাসার লিল্লাহ বোর্ডিংয়ে এতিম গরিবদেরকে দান করে থাকে পরিকল্পিতভাবে চামড়ার মূল্য কমিয়ে দিয়ে মাদ্রাসাগুলোর অন্যতম আয়ের উৎস  বন্ধ করে মাদরাসা ধ্বংসের ষড়যন্ত্র করেছিল পতিত সরকার। বর্তমান সরকারকে এ ব্যাপারে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। 

তারা আরো বলেন, কওমি মাদ্রাসায় সরকার কর্তৃক লবণ সরবরাহ করার ঘোষণা সম্পূর্ণ অযৌক্তিক। মাদরাসার ছাত্র শিক্ষকদের দ্বারা কাঁচা চামড়ায় লবণ লাগানো কখনো সম্ভব নয়। তাছাড়া মাদরাসা গুলোতে কাঁচা চামড়া মজুদ করে রাখার গোডাউন নেই, অনুকূল পরিবেশ নেই। দীর্ঘদিন এই চামড়া মজুদ করে রাখলে দুর্গন্ধে এলাকার পরিবেশ দূষণ হবে।  এতে চামড়া পচে গিয়ে আরো ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই লবণ সরবরাহ করতে হলে আরৎদারদেরকে করুন। এবং চামড়া শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে প্রয়োজনে ট্যানারি মালিকদের পরামর্শ নিয়ে তাদেরকে যথাযথ সহযোগিতা করুন।

এসময় সকলেই সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উচিত কোরবানির পশুর চামড়ার মূল্য পুনর্বিবেচনা করে নতুন করে ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ করা। অন্যথায় সারা দেশব্যাপী ওলামা কেরাম দেশ ও জনস্বার্থে আন্দোলনের মাধ্যমে দাবি আদায়ে মাঠে নামতে বাধ্য হবে।

আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, মুফতী ইলিয়াস মাদারীপুরী, মাদরাসা উবাই ইবনে কাহাবের মুহতামিম মাওলানা সাজেদুর রহমান ফয়েজী, আশরাফুল উলুম মাদ্রাসার মুহতামিম মুফতি হাবিবুর রহমান, মুফতি সাইফুল ইসলাম, দাওয়াতুল ইসলাম ইন্টারন্যাশনাল মাদরাসার পরিচালক মুফতি সুলতান মহিউদ্দিন,মাওলানা সাইফুল ইসলাম সুনামগঞ্জী  মুফতী কামরুজ্জামান রহমানী ও  মুফতী ফখরুল ইসলাম প্রমুখ।

আলোচনা সভায় আগামীকাল রবিবার (১ জুন) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে মানববন্ধন ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সচিব বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করার সিদ্ধান্ত হয়।


এই এলাকার অন্যান্য সংবাদ দেখতে ক্লিক করুন: ঢাকা ঢাকা